কোভিড-১৯ এর কারণে
দেশে দেশে স্কুল বন্ধ
হয়ে বিশ্বের ৮০ শতাংশের বেশি
শিক্ষার্থীর শিক্ষা কার্যক্রম বিঘ্নিত
হওয়ায় ইউনিসেফ সব দেশে শিশুদের
লেখাপড়া অব্যাহত রাখতে উল্লেখযোগ্য হারে
সহায়তা বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে।
এর আওতায় স্কুলগুলোকে নিরাপদ
রাখার পদক্ষেপও নেওয়া হবে।
ইউনিসেফ
বাংলাদেশের প্রতিনিধি তোমো হোজুমি বলেন,
“বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মত শিশুদের
ও স্কুলের কর্মচারীদের ভাইরাস সংক্রমনের ঝুঁকি
কমাতে বাংলাদেশের স্কুলগুলোও বন্ধ করতে হয়েছে। এই
নজিরবিহীন পরিস্থিতে শিশুরা যাতে বাড়ীতেই
বিভিন্ন বিকল্প শিক্ষা ব্যাবস্থার
মাধ্যমে তাদের পড়ালেখা অব্যাহত
রাখতে পারে এবং এই
জরুরী অবস্থার নেতিবাচক প্রভাব যাতে শিশু
ও সমাজের উপর না
পরে সেজন্য আমাদের এখন
সম্মিলিতভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে”
হোজুমি
বলেন, “অন্যান্য দেশের জরুরী অবস্থার
অভিজ্ঞতার থেকে দেখা যায়,
শিশুরা যত বেশি সময়
স্কুল থেকে দূরে থাকে,
তাদের স্কুলে ফেরার সম্ভাবনা
ততটাই কমে যায়।
তাই এই কোভিড-১৯
মোকাবেলায় শিশুদের লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার জন্য
বিকল্প পদ্ধতি তৈরি করা
আমাদের কার্যক্রমের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।”
বাংলাদেশে
কোভিড-১৯ এর কারণে
স্কুল বন্ধ থাকাকালে শিশুদের
লেখাপড়া অব্যাহত রাখতে প্রাথমিক ও
গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে
সহায়তা করছে ইউনিসেফ।
ভাইরাসের
সংক্রমণ থেকে শিশুরা যাতে
যথাযথ সামাজিক দূরত্বে থাকে সেজন্য টিভি,
রেডিও, মোবাইল ফোন ও
ইন্টারনেট প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে তাদের লেখাপড়া
চালিয়ে যেতে সহযোগিতার লক্ষ্যে
সরকারের সঙ্গে কাজ করবে
ইউনিসেফ। এই
উদ্যোগে শিশুদের লেখাপড়া হবে অংশগ্রহণমূলক, এতে
অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের যুক্ত
করা হবে, শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণের
ওপর নজর রাখা হবে
এবং সাথে সাথে শিক্ষার্থীরা
কতটুকু শিখতে পারছে তার
মূল্যায়ন করা হবে।
বাংলাদেশ
সরকারের তথ্য-প্রযুক্তি বিভাগের
অধীনে অ্যাকসেস টু ইনফরমেশনের (এটুআই)
মাধ্যমে শিশুদের লেখাপড়া অব্যাহত রাখার জন্য প্রারম্ভিকভাবে
শিক্ষার ধারবাহিকতা বিষয়ক পরিকল্পনা তৈরি
ও বাস্তবায়নে ইউনিসেফ ইতোমধ্যে সরকারকে সহযোগিতা করা শুরু করেছে। এর
আওতায় ধারণকৃত ক্লাস সংসদ টেলিভিশনে
সম্প্রচার করা হবে, যার
মাধ্যমে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের
শিশুরা ঘরে বসে লেখাপড়া
চালিয়ে যেতে পারবে।
এই
অংশীদারিত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ
হবে ছেলে-মেয়েদের সুরক্ষা
নিশ্চিত করে তাদের কীভাবে
লেখাপড়া চালিয়ে নিতে সহযোগিতা
করা যায়, সেই তথ্য
বাবা-মা ও অভিভাবকের
কাছে পৌঁছে দেওয়া।
স্কুল
বন্ধের ঝুঁকিগুলো বিবেচনায় রেখে অন্যান্য অংশীদারদের
সাথে নিয়ে ইউনিসেফ সরকারের
সঙ্গে কাজ করবে যাতে
স্কুল পুনরায় চালু হলে
সেগুলো শিক্ষার্থীদের পাঠদানে প্রস্তুত থাকে এবং শিশুরাও
যাতে স্কুলে ফেরে তা
নিশ্চিত করা যায়।
১৪৫
দেশে ইউনিসেফ অংশীদারদের সাথে নিচের কাজগুলো
করবে -
১.
সরকারের সংকট মোকাবেলা পরিকল্পনায়
সহায়তা যাতে কারিগরি সহযোগিতা,
দ্রুত ঝুঁকি বিশ্লেষণ, তথ্য
সংগ্রহ এবং স্কুল পুনরায়
চালুর পরিকল্পনা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
২.
নিরাপদে স্কুল পরিচালনার পরিকল্পনা
প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়নে
সহায়তা, অনুবাদ ও মুদ্রণের
মতো গণযোগাযোগের কঠিন কাজগুলো করা,
নিরাপদ বিদ্যালয় গাইডলাইন বিতরণ ও বাস্তবায়ন,
স্কুলে হাইজিন উপকরণ ও
সরঞ্জাম নিশ্চিত করা এবং রোগ
প্রতিরোধ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রচার, নিজেদের
ও শিক্ষার্থীদের মনস্তাত্ত্বিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের
জন্য শিক্ষক ও সেবাদানকারীদের
প্রশিক্ষণ।
৩.
শিশুদের শিক্ষা কার্যক্রম চলমান
রাখা এবং অনলাইন, রেডিও
ও টেলিভিশন ভিত্তিক বিকল্প শিক্ষা প্রোগ্রামের
ডিজাইন ও সেগুলো তৈরি
করাসহ দূরবর্তী শিক্ষা কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের
প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা।
৪.
বৈশ্বিক মহামারীর বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় জ্ঞান বিনিময় ও
সক্ষমতা তৈরি। ভবিষ্যৎ
মহামারী মোকাবেলা নিয়েও ধারণা প্রদান।
সূত্র: ইউনিসেফ
No comments:
Post a Comment