জয়পুরহাট র‌্যাব ক্যাম্পের কয়েকজন সদস্যকে বোকা বানিয়ে মাদক ব্যবসায়ী লাপাত্তা


 মথুরাপুর ইউপি যুবলীগের সভাপতি এশরাক হোসেন বলেন, ফেরদৌস আলম এলাকার কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী। র‌্যাব সদস্যরা র্সোসের মাধ্যমে ফেরদৌস আলমকে পঞ্চাশ হাজার টাকা দিয়েছিল। সেই টাকা নিয়ে ফেরদৌস তাঁর স্ত্রী বাড়ি থেকে সটকে পড়েন। র্সোসের টাকা খোয়া যাওয়ায় র‌্যাব সদস্যরা ইউপি চেয়ারম্যানের শরণাপন্ন হন।
 ফেরদৌস হোসেন (৪৫) নামে ফেন্সিডিল ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে ৪ টি গরু ধরে নিয়ে যাওয়ার দুই দিন পর টাকার বিনিমিয়ে ফেরত দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার সকালে ফেরদৌস হোসেন তাঁর প্রতিবেশি বাবু হোসেন এক ব্যক্তিকে ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে পাঠিয়ে ওই ৪ টি গরু তাঁর বাড়িতে ফেরত নিয়ে আসেন।
মঙ্গলবার মথুরাপুর গ্রামে গিয়ে জানা যায়, ওই গ্রামের বাসিন্দা ফেরদৌস আলম ফেন্সিডিল ও ইয়াবার ব্যবসা করেন। ফেরদৌসের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মাদকের মামলা রয়েছে। গত রোববার দুপুরে জয়পুরহাট র‌্যাব ক্যাম্পের কয়েকজন সদস্য ফেন্সিডিলের ক্রেতা সেজে মথুরাপুর গ্রামে আসেন। তাঁরা গ্রামের ত্রিমুহনী সেতুর সড়কের কাছে অবস্থান করছিলেন। ওই পথ দিয়ে আজিজুল ইসলাম (৩৫) নামে একব্যক্তি মাদক ব্যবসায়ী ফেরদৌস আলমের বাড়িতে আসছিলেন। এসময় র‌্যাব সদস্যরা তাঁকে আটক করে তাঁর কাছে থাকা ৭৫ বোতল ভারতীয় ফেন্সিডিল জব্দ করেন। ওই খবর পেয়ে ফেরদৌস হোসেন ও তাঁর স্ত্রী বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। ওই ঘটনায় র‌্যাব-৫ জয়পুরহাট ক্যাম্পর ডিএডি নায়েব সুবেদার রুহুল আমিন বাদী হয়ে বদলগাছী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় আটক পত্মীতলা উপজেলার চকভবানী গ্রামের আজিজুল ইসলাম ও পলাতক ফেরদৌস আলমকে আসামী করা হয়। ওইদিনই র‌্যাব সদস্যরা আজিজুলকে বদলগাছী থানায় হস্তান্তর করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও গ্রামবাসীরা সূত্রে জানা যায়, মথুরাপুর গ্রাম থেকে র‌্যাব সদস্যরা চলে যাওয়ার পর মথুরাপুর ইউপির এক নম্বর ওর্য়াডের চৌকিদার আলিম মথুরাপুর ইউপির যুবলীগের র্শীষ নেতাদের নিয়ে ফেরদৌস আলমের বাড়িতে আসেন। তাঁরা ফেরদৌসের বাড়ির গোয়ালঘর থেকে চারটি গরু ধরে নিয়ে যান। ৪ টি গরুই মথুরাপুর ইউপির যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রাসেলের বাড়িতে আটকে রাখা হয়। মথুরাপুর ১ নম্বর ওর্য়াড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম গরুগুলো ফেরত আনতে ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুর রহমানের কাছে যান। সাইফুল ইসলাম বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানের লোকজনেরা আমার কাছে ৬০ হাজার টাকা দাবি করেছিলেন। একারণে গরু নেইনি। গত সোমবার সকালে ফেরদৌস আলমের ৪ টি গরু ফেরত দিয়েছে বলে শুনেছি।
মথুরাপুর গ্রাম থেকে ফেরার পথে বেলা এগারোটার সময় জবারীপুর-গোবরচাপা সড়কে দুই ব্যক্তি ৪ টি গরু সঙ্গে নিয়ে মথুরাপুর গ্রামের দিকে যাচ্ছিলেন। বাবু নামে একব্যক্তি বলেন, এই ৪ টি গরু ফেরদৌসের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে আটকে রাখা হয়েছিল। ইউপি চেয়ারম্যান ৫৪ হাজার টাকা হাতে নেওয়ার পর আমরা রাসেলের বাড়ি থেকে গরুগুলো নিয়ে যাচ্ছি। এই টাকা ফেরদৌস আমাদের দিয়েছিল।
মথুরাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান গতকাল মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটায় মোবাইল ফোনে এ প্রতিবেদককে বলেন, ফেরদৌস আলম র‌্যাব সদস্যদের র্সোসের পঞ্চাশ হাজার নিয়ে বাড়ি থেকে উধাও হয়ে যান। অভিযানে থাকা র‌্যাব সদস্যরা আমার কাছে এসে ঘটনাটি খুলে বলেন। তাঁরা আমার কাছ থেকে ওই টাকা নিয়েছেন। বিনিময়ে তাঁরা আমাকে ফেরদৌসের ৪টি গরু এনে দিয়েছেন। গত সোমবার আমাকে ৫৪ হাজার টাকা দিয়ে গরু ফেরত নিয়ে গেছে।
বদলগাছী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জালাল উদ্দিন বলেন, ফেরদৌস আলমের বাড়ি থেকে ৪ টি গরু ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা আমার জানা নেই। র‌্যাব ৭৫ বোতল ফেন্সিডিলসহ একব্যক্তিকে থানায় সোর্পদ্দ করেছে। এঘটনায় র‌্যাবের ডিএডি নায়েব সুবেদার রুহুল আমিন বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। র‌্যাব-৫ জয়পুরহাট ক্যাম্পের ডিএডি রুহুল আমিনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এখন ব্যস্ত আছি। পরে কথা বলব। ফেরদৌস আলম পলাতক থাকায় তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
                                                                                                                     তথ্যসূত্র: গাজীপুর দর্পন

0 comments: